Bilas Moulvibazar, Bilas

ঢাকা, বুধবার   ০৯ এপ্রিল ২০২৫,   চৈত্র ২৫ ১৪৩১

আই নিউজ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

এক জায়গায় ভোট দিলে আরেক জায়গায় চলে যাবে না: সিইসি 

১১টি সংসদীয় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সিইসি। ছবি- সংগৃহীত

১১টি সংসদীয় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সিইসি। ছবি- সংগৃহীত

ভোট এক জায়গায় দিলে আরেক জায়গায় চলে যাবে- এটি সত্য নয় বলে জানিয়েছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। 

এক জায়গায় ভোট এখানে দিলে আরেক জায়গায় চলে যাওয়ার অভিযোগকে অবান্তর প্রচারণা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, এসব প্রচারণা বিশ্বাস করবেন না। এটা সম্ভব নয়। 

সিইসি বলেন, আমরা গবেষণা করে দেখেছি, প্রিজাইডিং অফিসার যদি কেন্দ্রে তার কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পারে তাহলে ওসি, ইউএনও, এসপি ও ডিসি ভেতরে গিয়ে কিছুই করতে পারে না। আর যদি কিছু করেও থাকেন তাহলে এসপি-ডিসি যিনিই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রোববার (২৪ ডিসেম্বর) জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় সিইসি এসব কথা বলেন।

এ সময় প্রার্থীদের অভিযোগ ও ভোট নিয়ে শঙ্কার কথা শোনেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। সভায় কয়েকজন প্রার্থী অভিযোগ করেন, এক জায়গায় ভোট দিলে আরেক জায়গায় ফল চলে যাবে বলে মাঠ পর্যায়ে ছড়ানো হচ্ছে।

এসময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা একটি ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ তৈরি করেছি। বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে ২ ঘণ্টা পরপর কত শতাংশ ভোট হলো- তা দেখতে পারবে। ধরেন ২টায় ২০ শতাংশ ভোট হলো, আর ৩টায় ৯০ শতাংশ হয়ে গেল- সেটা তো বিশ্বাসযোগ্য হবে না। কাজেই ।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, এসব বক্তব্য সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা প্রসূত। এগুলো মোটেই সঠিক নয়, একেবারেই সম্ভব নয়। যেভাবে আইনে নির্ধারণ করা আছে, ভোটগ্রহণে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। ভোটগ্রহণ করা হবে স্বচ্ছ বাক্সে, সকালে ব্যালট পেপার আসবে, পোলিং এজেন্টরা ব্যালট পেপার দেখে নেবে, পরীক্ষা করে নেবে আগে থেকে সিল মারা আছে কি না। তারপর পোলিং শুরু হয়ে যাওয়ার পর পোলিং এজেন্টরা স্বাক্ষর করবে ব্যালট বক্স স্বচ্ছ ছিল। পোলিং শুরু হওয়ার পর বিকেল পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে।

তিনি বলেন, প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট দিয়ে নিশ্চিত করতে হবে, ভোটকেন্দ্রের ভেতরে কোনো অন্যায়-কারচুপি হয়নি। এটি তারাই নিশ্চিত করবেন। এটাকে বলা হয় কেন্দ্রের ভেতরে ভারসাম্য সৃষ্টি করা করা এবং সেটার একমাত্র উপায় হচ্ছে প্রার্থীদের বিশ্বস্ত ও দক্ষ পোলিং এজেন্ট দেওয়া। পোলিং এজেন্টরা তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা ঢালাওভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওসিদের বদলি করেছি। এরপরও অভিযোগের ভিত্তিতে করছি, যেন ভোট নিয়ে কোনো প্রশ্ন না থাকে। ওসি, এসপি, ডিআইজি, আইজি যিনি যে কেন্দ্রেই যাক না কেন, খেলাটা হবে কিন্তু প্রার্থীদের মধ্যে ভোটের দিন। ভোট কেন্দ্রের ভেতরে কিন্তু আইজি, ডিআইজি বা বিভাগীয় কমিশনারও ঢুকতে পারবে না। শুধুমাত্র অনুমতি থাকায় রিটার্নিং কর্মকর্তা কেন্দ্রেরে ভেতরে ঘুরতে পারবেন। কাজেই কোন ওসিকে বদলি করলাম, কোন ওসিকে বসালাম এটি বিষয় নয়।

সিইসি বলেন, আমরা গবেষণা করে দেখেছি, প্রিজাইডিং অফিসার যদি কেন্দ্রে তার কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পারে তাহলে ওসি, ইউএনও, এসপি ও ডিসি ভেতরে গিয়ে কিছুই করতে পারে না। আর যদি কিছু করেও থাকেন তাহলে এসপি-ডিসি যিনিই হোক, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভোটের দিন। এই কয়েকদিন কী হলো, একটা সময় সবাই ভুলে যাবে। কিন্তু ভোটের দিন ফলাফল কী হলো, পোলিংয়ের মধ্যে কারচুপি হলো কি না, যত্রযত্র অবস্থায় সিল মারা হলো কি না-এমন কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে সেটা নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করবে। এবার এ ধরণের ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা খুবই কম। সুস্পষ্টভাবে প্রশাসনকে বলা হয়েছে। তারপরও আমরা বলেছি ওই ধরণের কোনো ঘটনা যদি কোনো কেন্দ্রে ঘটতে থাকে, তাহলে রিটার্নিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা নিজে ভোট বন্ধ করে দিতে পারবেন। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশন থেকে আমরা যদি এ ধরণের কোনো তথ্য পাই কারচুপির ঘটনা ঘটেছে, তাহলে কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে সেই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিতে পারব।

পোলিং এজেন্ট বের করে দিলে ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভোটকেন্দ্রের ভেতরের ভারসাম্য রক্ষা করবে পোলিং এজেন্ট। পোলিং এজেন্ট না রাখলে হবে না। নির্বাচনকে বিশ্বাসযোগ্য করতে হলে পোলিং এজেন্টকে ভেতরে থাকতেই হবে। নির্বাচন শেষ হয়ে যাওয়ার পর বলা হলো, পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়া হয়েছিল- তাহলে তো হলো না। যদি কাউকে বের করে দেওয়া হয় তবে সঙ্গে সঙ্গে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে নালিশ করতে হবে। ভেতরে ভারসাম্য রক্ষা করতে ব্যর্থ হলে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে দেবে। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে খবর দিয়ে ওই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেবে। ওই কেন্দ্রের ভোট আরেকবার নেব, প্রয়োজনে ১০ বার নেব।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রতি কেন্দ্রে ১৫-১৬ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে। আনসার ও ভিডিপি সদস্যরাও গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে। তারা ১২ জন থাকবে। তাদের মাঝে কেউ কেউ সশস্ত্র অবস্থায় থাকবে। কেন্দ্রে বিভিন্ন বাহিনীর লোকজন থাকবে।

কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, কেন্দ্রে শুধু ১২ জন পুলিশ সদস্য থাকলে প্রার্থীরা তাদের হাত করতে পারবে। কিন্তু কেন্দ্রে যদি ৫টি বাহিনীর লোক থাকে, তাহলে কাউকে হাত করতে পারবে না। কাজেই পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‍্যাব এবং স্টাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী থাকবে। কেন্দ্রের বাইরের যে অংশ, তা পুরোপুরি সংরক্ষিত থাকবে।

আই নিউজ/এইচএ 

Green Tea
সর্বশেষ
জনপ্রিয়